পহেলা বৈশাখে জেলা প্রশাসন এর অভিযান , জনসমাগম করার অপরাধে ৭২ হাজার টাকা জরিমান
বরিশাল জেলা প্রশাসনের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ পহেলা বৈশাখ ১৪২৭ এর এই দিনে জেলা প্রশাসন বরিশালের মোবাইল কোর্ট অভিযান অব্যাহত আছে। আজ ১৪ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল থেকে বরিশাল মহানগরীর চকবাজার রোড, কাঠপট্টি রোড, বগুড়া রোড, নতুন বাজার ও হাটখোলা রোড পেয়াজপট্টি, আমতলার মোড়, সাগরদী, রুপাতলী, শের-ই-বাংলা মেডিকেলে, চাঁদমারী রোড, দিনারের পুল, দুর্গাপুর হাট, বিশ্বাসের হাট, চরমোনাই মাদ্রাসা গেইট এবং বুখাইনগর বাজার এলাকায় জেলা প্রশাসন বরিশাল এর পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট এর অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালে জনসমাগম করে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বরিশাল জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে ১২ টি দোকান কে ৭২ হাজার টাকা জরিমানা অাদায় করা হয়। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অধিক মানুষের সমাগম এবং চায়ের দোকানসহ অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা পালনের পাশাপাশি গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমানের নির্দেশনায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল মোঃ জিয়াউর রহমান এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ হেলাল উদ্দীন। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি এ সময় বিভিন্ন টি-স্টল, মুদি দোকান ও এলাকার মোড়ে মোড়ে যেখানেই জনসমাগম দেখা গেছে তা ছত্রভঙ্গ করা হয় এবং নিরাপদ দূরত্বে চলার নির্দেশনা, মাক্স পরার নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে মাক্স বিতরণ করা হয়। এসময় সবাইকে যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করা হয় এবং সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে জরুরি ঔষধ ব্যতীত সকল প্রকার দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। এসময় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনায় করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোঃ হেলাল উদ্দীন। অভিযান পরিচালনা কালে নগরীর হাটখোলা রোড পেয়াজ ও আদা পট্টিতে পেঁয়াজের প্রদর্শিত মূল্য তালিকার সাথে ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদে ব্যাপক গরমিল থাকায় এবং স্বাভাবিক বাজার মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে বিক্রি করার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০ ধারা মোতাবেক মেসার্স সোনিয়া স্টোর্স কে ৫ হাজর টাকা, মেসার্স কৃষি বাণিজ্যালয় কে ১৫ হাজার টাকা এবং আনোয়ার হোসেন ভুঁইয়া আড়ত কে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া, কাঠপট্টি রোডে ইলেকট্রিক সামগ্রীর দোকান খোলা রেখে জনসমাগমের মাধ্যমে অবহেলাজনিত কার্য দ্বারা জীবন বিপন্নকারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা আছে এরূপ কার্য করায় দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ধারা ২৬৯ মোতাবেক খাজা ইলেকট্রিক নামক প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার টাকা এবং একই অপরাধে এলাহী ক্লথ স্টোরকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে আইনানুগ সহযোগিতা প্রদান করেন র্যাব-০৮ এবং বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম। অপরদিকে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান। অভিযান পরিচালনা কালে নগরীর চাঁদমারি এলাকার ১ টি টি-স্টল, দুর্গাপুর হাট এলাকায় ১টি সিমেন্টের দোকান, চরমোনাই মাদ্রাস গেইট এলাকায় ২ টি জুতার ও ১টি কাপড়ের দোকান, বুখাইনগর বাজার এলাকায় ২ টি রেফ্রিজারেটর এর দোকান খোলা রেখে জনসমাগম করে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে ক্ষেত্রবিশেষে প্রায় ৬-৮ জন করে আড্ডারত অবস্থার পাওয়া যায়। এভাবে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে লোকসমাগম করে সরকারী আদেশ অমান্য করায় এবং করোনা ভাইরাস বিস্তারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করার অপরাধে বর্ণিত সাতটি দোকানকে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৫ (১) ধারা এবং দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারায় মোট ১৮ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এসময় বিনা প্রয়োজনে বাইরে ঘুরাঘুরি না করার জন্য ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য প্রতিটি মোড়ে মোড়ে এবং এলাকার গলিতে গলিতে মাইকিং করা হয়। যারা আইন অমান্য করে বাইরে ঘুরাঘুরি ও আড্ডায় মগ্ন থাকবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। অভিযানে প্রসিকিউসন অফিসার হিসাবে সহযোগিতা করেন উপজেলা স্যানিটারি অফিসার ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক জনাব মোঃ জাকির হোসেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সহযোগিতা করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম। অভিযান শেষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয় বলেন, জনগণকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা এবং করোনা ভাইরাসের বিস্তার এবং এটিকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা রোধকল্পে জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমান সদা সচেষ্ট এবং তাঁর নির্দেশনায় নিয়মিত এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
Leave a Reply